Buscar
viernes, 06 de diciembre de 2024 02:58h.

ইন্দোনেশীয় উড়োজাহাজের খোঁজে তল্লাশি

ইন্দোনেশীয়

সমুদ্রের নীচেই রয়েছে উধাও হয়ে যাওয়া ইন্দোনেশীয় বিমান কিউজেড-৮৫০১। রেডার-তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্ধানকারী দলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। রবিবার সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে ১৫৫ জন যাত্রী ও ৭ জন কর্মী-সহ মাঝ আকাশ থেকে উধাও হয়ে যায় এয়ার এশিয়ার ওই বিমানটি। সারা দিন খুঁজেও বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। খারাপ আবহাওয়া ও অন্ধকার নেমে আসার কারণে ওই দিন সন্ধ্যায় সন্ধানকাজ স্থগিত করে দেওয়া হয়। সোমবার দিনের আলো ফুটতেই ফের শুরু হয় সন্ধানের কাজ।

 

সমুদ্রের নীচেই রয়েছে উধাও হয়ে যাওয়া ইন্দোনেশীয় বিমান কিউজেড-৮৫০১। রেডার-তথ্য বিশ্লেষণ করে সন্ধানকারী দলের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। রবিবার সকালে ইন্দোনেশিয়া থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে ১৫৫ জন যাত্রী ও ৭ জন কর্মী-সহ মাঝ আকাশ থেকে উধাও হয়ে যায় এয়ার এশিয়ার ওই বিমানটি। সারা দিন খুঁজেও বিমানটির সন্ধান পাওয়া যায়নি। খারাপ আবহাওয়া ও অন্ধকার নেমে আসার কারণে ওই দিন সন্ধ্যায় সন্ধানকাজ স্থগিত করে দেওয়া হয়। সোমবার দিনের আলো ফুটতেই ফের শুরু হয় সন্ধানের কাজ।

এ দিন সকালে সাংবাদিক বৈঠকে ইন্দোনেশীয় তদন্তকারী দলের প্রধান বামবাং সোলিস্তো বলেন, “রেডার থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে বিমানটি সমুদ্রের তলায় রয়েছে।” বিমানটির খোঁজে ইন্দোনেশিয়ার ১২টি জাহাজ, ৩টি হেলিকপ্টার এবং বায়ুসেনার ৫টি সন্ধানকারী বিমান নামানো হয়েছে। সঙ্গে রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ৭টি জাহাজ ও ২টি হেলিকপ্টার। আছে সিঙ্গাপুরের বিমান এবং মালয়েশিয়ার জাহাজও। তবে এখনও পর্যন্ত কোনও কিছুরই খোঁজ মেলেনি বলে জানানো হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, সমুদ্রের তলায় সন্ধান চালানোর মতো উপযুক্ত পরিকাঠামো ইন্দোনেশিয়ার আছে কি না? অত্যন্ত শক্তিশালী যন্ত্র নিয়েও ভারত মহাসাগরের তলায় নিঁখোজ মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স-এর বিমান এমএইচ ৩৭০-এর খোঁজ এখনও পাওয়া যায়নি। তবে এ ক্ষেত্রে জাভা সাগরের গভীরতা কম এবং এলাকাটি তুলনায় অনেক ছোট। সূত্রের খবর, যে অঞ্চলটিতে খোঁজ চালানো হচ্ছে তা, সুইডেনের মতো চওড়া। পুরো এলাকাটিকে চার ভাগে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি ভাগ প্রায় এক হাজার বর্গমাইল চওড়া। রবিবারের মতোই ওই অঞ্চলের আবহাওয়া এখনও বেশ খারাপ রয়েছে। ফলে সন্ধান কাজ চালানোর ক্ষেত্রে যথেষ্ট বেগ পেতে হচ্ছে।

এ দিন সুরাবায়া বিমানবন্দরেই এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ নিখোঁজ বিমানের যাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে ইন্দোনেশীয় সরকারের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। নিখোঁজ বিমানটি সম্পর্কে এখনও পর্যন্ত যে সমস্ত তথ্য পাওয়া গিয়েছে তাঁদের তা জানানো হয়। পাশাপাশি, চাঙ্গি বিমানবন্দরেও সিঙ্গাপুরের যাত্রীদের পরিবারের সঙ্গে এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ কথা বলেন। ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের পাশাপাশি ওই পরিবারগুলিকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। বিমানটির সন্ধানে নামা ‘ন্যাশনাল সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ এজেন্সি রিপাবলিক অব ইন্দোনেশিয়া’র সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এয়ার এশিয়া কর্তৃপক্ষ। বিমানটির নির্মাণকারী সংস্থা ফ্রান্সের এয়ারবাস। সে দেশের বিমান দুর্ঘটনার তদন্তকারী সংস্থাও তাই এই সন্ধানকাজে যোগ দিতে পারে বলে সূত্রের খবর।

আবহবিদেরা জানিয়েছেন,  রবিবার সকালে ইন্দোনেশিয়ার ওই অঞ্চলে আবহাওয়া খুব খারাপ ছিল। প্রচণ্ড মেঘ, তার সঙ্গে ঘন ঘন বিদ্যুত্ চমকাচ্ছিল। বিমানটি ওই অঞ্চলের প্রায় ৩২ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়ছিল। খারাপ আবহাওয়া এড়ানোর জন্য, সংযোগ বিছিন্ন হওয়ার মিনিট পাঁচেক আগে পাইলট কিছুটা পথ পরিবর্তন করে প্রায় ৩৮ হাজার ফুট উপর দিয়ে উড়তে চাওয়ার অনুমতি চেয়েছিলেন। সেই সময়ে বিমানটি ইন্দোনেশিয়ার বন্দর-শহর তানজুং পানডন থেকে বোর্নিওর পন্টিয়ানকের উপর দিয়ে উড়ছিল। কিন্তু, তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, পরিস্থিতি কিছুটা বদলালেও ৩৮ হাজার ফুট উপরেও খারাপ আবহাওয়া পুরোপুরি এড়াতে পারেননি পাইলট। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, অতটা উঁচুতে ওই সময়ে ঠান্ডা বাতাসের প্রভাবে ‘ডাউন ড্রিফ্ট’ তৈরি হতে পারে। এর ফলে বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলতে পারে। এবং ঘটনাটি এত দ্রুত ঘটেছে হয়তো যে, অভিজ্ঞ পাইলটের পক্ষেও সে বার্তা পাঠানো সম্ভব হয়নি।

তবে, বিমানটির খোঁজ না পেলে কিছুই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞেরা। যেমন, মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্স-এর এমএইচ ৩৭০ নিখোঁজ হওয়ার কারণ এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। বিমান কোথাও ভেঙে পড়লে তার ভিতরে থাকা বিশেষ যন্ত্র সক্রিয় হয়, তার পরে সেটি সঙ্কেত পাঠাতে শুরু করে। ফলে নিখোঁজ বিমানের সন্ধান পেতে সুবিধা হয়। কিন্তু, এমএইচ ৩৭০-এর মতো এ ক্ষেত্রেও বিমানের ভিতরে থাকা ওই যন্ত্র থেকে কোনও সঙ্কেত পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি, এমএইচ ৩৭০ নিখোঁজ হওয়ার পরে বিমানে ‘জিপিএস ট্র্যাকার’ লাগানোর কথা ছিল। কিন্তু, এ বিমানে তা বসানো হয়নি। তবে বিমানটি মাত্র ছ’বছরের পুরনো, এয়ারবাস সংস্থার তৈরি ৩২০-২০০ গোত্রের। নিরাপদ বলে এই বিমানের খ্যাতিও আছে বিশ্বজোড়া। এয়ার এশিয়া ছাড়াও বিশ্বের অন্য বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা এই বিমান ব্যবহার করে। এয়ারবাস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, তাঁরা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছেন। তদন্তে সব রকমের সাহায্য করার প্রতিশ্রুতিও দেন তাঁরা।