Buscar

মহানগরি দখলের ডাক দিল অমিত শাহ

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অমিত শাহর সভার মূল সুর ছিল ২০১৬-য় বাংলা দখল৷‌ আর তারই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তাঁদের লক্ষ্য কলকাতা পুরসভা দখল৷‌ সভায় নেতারা ভাষণে বলেন, বাংলা এখন আবার পরিবর্তনের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷‌ দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহ রবিবার এই সভায় বললেন, তৃণমূলের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে৷‌ শ্রোতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বাংলায় রাজ করার জন্য কমিউনিস্টদের সুযোগ দিয়েছেন৷‌ তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছেন৷‌ এবার বি জে পি-কে একবার সুযোগ দিন৷‌...........

ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে অমিত শাহর সভার মূল সুর ছিল ২০১৬-য় বাংলা দখল৷‌ আর তারই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তাঁদের লক্ষ্য কলকাতা পুরসভা দখল৷‌ সভায় নেতারা ভাষণে বলেন, বাংলা এখন আবার পরিবর্তনের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে৷‌ দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি অমিত শাহ রবিবার এই সভায় বললেন, তৃণমূলের কাউন্টডাউন শুরু হয়ে গিয়েছে৷‌ শ্রোতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বাংলায় রাজ করার জন্য কমিউনিস্টদের সুযোগ দিয়েছেন৷‌ তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছেন৷‌ এবার বি জে পি-কে একবার সুযোগ দিন৷‌ দলের পশ্চিমবঙ্গের ভারপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থনাথ সিংহ বললেন, মদন-মুকুল-মমতা নয়, বাংলায় এখন একটাই ‘ম’ চাই– মোদি৷‌ ২০১৪-য় ভাগ মদন ভাগ, ’১৫-য় ভাগ মুকল ভাগ, ’১৬-য় ভাগ মমতা ভাগ৷‌ বি জে পি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিন‍্হা বলেন, ‘তোমারে (তৃণমূল) বধিবে যে, এই প্রাম্তরে (ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে) বাড়িছে সে৷‌’ চন্দন মিত্র বলেন, রবিবার বি জে পি-র উত্থান দিবস পালিত হল, মমতার পতনের ঘণ্টা বাজা শুরু হয়ে গেল৷‌ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, শেষের এটাই শুরু, শেষ ঘণ্টা বাজবে ’১৬-য়৷‌ এদিনের বি জে পি-র সভায় তীর নিক্ষিপ্ত হয়েছে তৃণমূলের দিকে৷‌ সারদা কেলেঙ্কারিতে কীভাবে তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা জড়িত, বর্ধমান বিস্ফোরণের পেছনে কীভাবে তৃণমূলের হাত কাজ করেছে– এ দুটি কথাই মূলত ঘুরেফিরে এসেছে বি জে পি-র নেতাদের মুখে৷‌ এর মধ্যে বড় অভিযোগটি তুললেন অমিত শাহ৷‌ তিনি বললেন, বর্ধমান-কাণ্ডে সারদার টাকা রয়েছে৷‌ আর তা দিয়েছে তৃণমূলিরাই৷‌ সভায় ভিড় ছিল ভালই৷‌ সেই ভিড় দেখে বি জে পি নেতারা খুশি হয়েছেন৷‌ অমিত শাহ মঞ্চ থেকে দূরের দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘যতদূর দেখি শুধু মাথা আর মাথা৷‌ মমতার ‘উল্টা গিন‍্তি’ শুরু হয়ে গেছে৷‌ মমতার পতন দেওয়ালে লেখা হয়ে গেছে৷‌ রবিবারের ঐতিহাসিক সভা এ কথাই বলে দিল৷‌ অনেক আশা করে মানুষ তৃণমূলকে ভোট দিয়েছিল৷‌ কিন্তু সাড়ে ৩ বছর দেখছে, কিছুই হয়নি৷‌ যেখানে ছিল, সেখান থেকে আরও নেমে গেছে৷‌ সিঙ্গুর আন্দোলনে ১২০০ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিলেন৷‌ সারদা কেলেঙ্কারির জন্য ১৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন৷‌ তা হলে মমতাজি কেন রাস্তায় নেমে আন্দোলন করছেন না? সি বি আই-তে যারা ধরা পড়েছে, মমতাজির হিম্মত থাকলে বলুন যে, তারা সৎ, তারা নির্দোষ৷‌ মমতা তাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছেন৷‌ বর্ধমান বিস্ফোরণে কেন রাজ্য যথাযথ তদম্ত করতে পারল না? কেন ধরতে পারল না অপরাধীদের? সেখান থেকেই মনে হয় তৃণমূলের হাত পেছন থেকে কাজ করেছে৷‌ সারদা চিটফান্ডের টাকা বর্ধমান-কাণ্ডের জন্য খরচ হয়েছে৷‌ তিনি ভোটব্যাঙ্ক রাজনীতি করেন, দেশের সুরক্ষার কথাও মাথায় রাখেন না৷‌ এটা তিনি বন্ধ করুন৷‌ আমরা গত লোকসভা নির্বাচনের পর বিভিন্ন রাজ্যে যে নির্বাচন হচ্ছে, তাতে জিতছি৷‌ ঝাড়খণ্ডেও জিতব৷‌ দিল্লিতেও জিতব৷‌ মোদিজির জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কংগ্রেস-মুক্ত হয়েছে৷‌ এবার মোদিজির জন্য বাংলা হবে তৃণমূল-মুক্ত৷‌ আপনারা বাংলায় রাজ করার জন্য কমিউনিস্টদের সুযোগ দিয়েছেন৷‌ তৃণমূলকে সুযোগ দিয়েছেন৷‌ এবার বি জে পি-কে একবার সুযোগ দিন৷‌ এখন পশ্চিমবঙ্গে কোনও বড় উদ্যোগ নেই, চা-বাগানে কাজ নেই৷‌ মোদিজির নেতৃত্বে আসুন, আমরা উন্নয়নের পথে যাই৷‌ পশ্চিমবঙ্গের জনতা একবার সেই স্বাদ নিন৷‌ বাংলাকে মোদিজির নেতৃত্বে আমরা একনম্বর রাজ্য করব৷‌ তিনি কেন্দ্রীয় সরকারে থেকে দেশের অনেক উন্নতি করছেন৷‌ এখন আমরা বাংলার উন্নতি করতে চাই৷‌ সেটা শুরু হোক আগামী কলকাতা পুরসভার নির্বাচনে৷‌ সেই নির্বাচন থেকেই তৃণমূলের পতন শুরু হোক৷‌’ অমিত শাহ নিজেকে দলের একজন ছোট কর্মী বলে মনে করেন৷‌ তার পর বলেন, ‘আমি বাংলার ভূমি থেকে তৃণমূলকে উচ্ছেদের জন্য এসেছি৷‌ পশ্চিমবঙ্গে মোদিজির বিজয়রথ এনে জঙ্গলরাজ থেকে পশ্চিমবঙ্গবাসীকে মুক্তি দিতে চাই৷‌ ভ্রষ্টাচার নয়, আমরা এমন সরকার আনব, যে সরকার উন্নয়নের মানে জানে৷‌ বাংলা পরিবর্তনের দরজায় এসে দাঁড়িয়েছে৷‌’ এ ছাড়া এদিন সভায় তথাগত রায় বলেন, তৃণমূল এখন সারদা কেলেঙ্কারি ও বর্ধমান বিস্ফোরণের জন্য এমন ডুবেছে যে, মানুষ তাদের ব্যর্থতার কথাও ভুলে যাচ্ছে৷‌ কিন্তু ওরা যে কিছু কাজ করতে পারেনি, সে কথা মানুষকে মনে রাখতে হবে৷‌ বি জে পি-র বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য বলেন, আমাদের এই সমাবেশ গণতন্ত্রের প্রকৃত মুখ৷‌ আমরা তৃণমূলের ভোট-রাজনীতির সমালোচনা করি৷‌ কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় বলেন, রবিবারের সভা থেকে নতুন বাংলার নতুন রাস্তায় হাঁটা শুরু হল৷‌ এই আওয়াজ দিদির কানে পৌঁছবে৷‌ আজ থেকে আমরা তৃণমূলকে নির্মূল করার কাজে নামছি৷‌ সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া বলেন, এ রাজ্যে মহিলাদের নিরাপত্তা নেই৷‌ নিরাপত্তা নেই চিটফান্ড কাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের৷‌ বরং সরকার যারা বঞ্চনা করেছে, তাদের বাঁচাতে ব্যস্ত৷‌ রাহুল সিন‍্হা বলেন, আমরা মাত্র দেড় দিনে এই সভার আয়োজন করেছি৷‌ তাতেই এত মানুষের জমায়েত হয়েছে৷‌ যদি দেড় মাস সময় পেতাম, তা হলে দেখিয়ে দিতাম৷‌ মমতা দিল্লিতে আদবানিজির সঙ্গে দেখা করেছেন, রাজনাথ সিংয়ের কাছে গিয়ে কান্নাকাটি করেছেন৷‌ আর আমরা ভিক্টোরিয়া হাউসের সামনে মাত্র এইটুকু একটু জায়গা অস্হায়ীভাবে চেয়েছিলাম, তাও ওরা দিতে চায়নি৷‌ আমাদের আদালতে লড়ে সে জায়গা নিতে হল৷‌ আমরা বলে থাকি চুরি করা মহাপাপ৷‌ তৃণমূল বলে, চুরি করা মহাবিদ্যা, যদি না পড় ধরা৷‌ তৃণমূল মুসলিমদের ঠকাতে চায়, কিন্তু আমরা তাদের ঠকাতে দেব না৷‌

বুদ্ধিজীবীদের মিছিল: মঙ্গলবার বি জে পি বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে পাল্টা মিছিল করবে৷‌ এজন্য ৭ সদস্যের একটি কমিটি গড়া হয়েছে৷‌ এদিন সভা শেষে রাহুল সিন‍্হা ৭ জনের নাম ঘোষণা করেন৷‌ এঁরা হলেন: জর্জ বেকার, জয় ব্যানার্জি, শর্মিষ্ঠা করপুরকায়স্হ, আর কে মোহাম্তি, পি সি সরকার, নিমু ভৌমিক এবং সুমন ব্যানার্জি৷‌