Buscar
miércoles, 24 de abril de 2024 04:38h.

আইএস-সন্ত্রাস রোখার ডাক পোপের

সন্ত্রাস রোখার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন, এ বার লিখিত আবেদন প্রকাশ করলেন পোপ ফ্রান্সিস। সারমর্ম একটাই বন্ধ হোক সন্ত্রাস, শেষ হোক মৃত্যুমিছিল। পাশাপাশি, জঙ্গিহানায় আক্রান্তদের পুনর্বাসনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।..................

সন্ত্রাস রোখার বার্তা আগেই দিয়েছিলেন, এ বার লিখিত আবেদন প্রকাশ করলেন পোপ ফ্রান্সিস। সারমর্ম একটাই বন্ধ হোক সন্ত্রাস, শেষ হোক মৃত্যুমিছিল। পাশাপাশি, জঙ্গিহানায় আক্রান্তদের পুনর্বাসনের বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।

তিন দিনের তুরস্ক সফর শেষে পোপ ফ্রান্সিস এবং অর্থোডক্স গির্জার ধর্মগুরু প্রথম বার্থোলোমিউ যুগ্ম ভাবে বিবৃতি দিয়ে তুরস্কের নেতাদের উদ্দেশে জানিয়েছেন, আইএস-এর সন্ত্রাসের শিকার হওয়া মানুষদের সাহায্যের বিষয়টিকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে। তাঁদের মধ্যে খ্রিস্টানদেরও যেন বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেই অনুরোধও করেছেন। কারণ ওই এলাকার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা দু’হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন।

বিবৃতিতে পোপ ও বার্থোলোমিউ লিখেছেন, “পশ্চিম এশিয়ায় আক্রান্ত সমস্ত মানুষের জন্য, বিশেষ করে আক্রান্ত খ্রিস্টানদের জন্য আর শুধু প্রার্থনা যথেষ্ট নয়। আন্তর্জাতিক স্তরে সংহতি রক্ষায় সকলের এগিয়ে আসা জরুরি।”

তুরস্ক সফরের শেষ দিনে ইস্তানবুলের একটি মসজিদে একসঙ্গে প্রার্থনা করেন এক কোটিরও বেশি কট্টর রোমান ক্যাথলিকদের প্রতিনিধি পোপ ফ্রান্সিস এবং তিন লক্ষ অর্থোডক্সদের ধর্মগুরু প্রথম বার্থোলোমিউ। সেখানে তাঁরা বলেন, “এক সময় যে সব অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে খ্রিস্টান ও মুসলিমদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ছিল, সে সব অঞ্চলেই নিজেদের মধ্যে হিংসায় লিপ্ত হয়েছে তারা। এটা দুর্ভাগ্যজনক।”

মানুষের প্রতি মানুষের মূল্যবোধ, সহানুভূতির জায়গা থেকে খ্রিস্টান, মুসলিম সকলকে আলোচনায় আহ্বান করেন তাঁরা। তাঁদের কথায়, “সুবিচার, শান্তি ও মানবাধিকারের স্বার্থেই এই আলোচনা জরুরি।” এই প্রসঙ্গে দু’দিন আগে নাইজেরিয়ার মসজিদের আত্মঘাতী জঙ্গি হানারও নিন্দা করেন পোপ ফ্রান্সিস। এই ঘটনাকে “ঈশ্বরের বিরুদ্ধে চরম পাপ” বলে উল্লেখ করেন তিনি। ওই হামলায় নিহত অন্তত ১২০। আহত প্রায় ৩০০ জন।

আজ, তুরস্ক সফরের শেষ দিনে মসজিদে প্রার্থনার পরে সিরিয়া ও ইরাকের ষোলো লক্ষ ঘরছাড়ার মধ্যে কয়েক জনের সঙ্গে দেখা করারও কথা ছিল তাঁদের। সেই সাক্ষাৎ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হলেও, শেষ পর্যন্ত কর্মসূচী ভেঙে কয়েক জন ঘরছাড়া যুবকের সঙ্গে দেখা করেন তিনি। কথাও বলেন।

তবে এই তুরস্ক সফরটিতেও বরাবরের মতোই প্রথা ভেঙে একটি অভিনব পদক্ষেপ করে ফের বিশ্ববাসীকে অবাক করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার প্রার্থনার পরে বার্থোলোমিউয়ের কাছে মাথা ঝুঁকিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন পোপ। তাঁর নিজের জন্য এবং রোমের গির্জার জন্য কল্যাণ কামনা করেন বার্থোলোমিউয়ের কাছে। ইতিহাস বলছে, ১০৫৪ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্ট ধর্মের দু’টি শাখা রোমান ক্যাথলিক গির্জা এবং গ্রিক অর্থোডক্স গির্জার মধ্যে ভাঙন ঘটে। তার পর থেকেই রীতি চালু হয়, অর্থোডক্স গির্জার ধর্মগুরু পোপের পা ছুঁয়ে চুমু খাবেন। এ বার তা তো হলই না, উল্টে বার্থোলোমিউয়ের কাছে আশীর্বাদ চেয়ে বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পোপ ফ্রান্সিস।